শহরবাসীর মনে চাপা আতঙ্ক। সতর্ক অপেক্ষায় সবাই। শহরের মেয়র এরই মধ্যে
নতুন একটি যন্ত্র আনিয়ে নিয়েছেন, ঘণ্টায় যেটি ছড়াতে পারে ১২০০ বালুর
বস্তা। টানা বৃষ্টি চলছেই। তবে উৎকণ্ঠা নিয়ে সবার অপেক্ষা শনিবারের।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামীকালই ব্রিসবেনে আঘাত হানার কথা সাইক্লোন
মার্সিয়ার। কিন্তু আগামীকাল যে বিশ্বকাপের ম্যাচও আছে এই শহরে!
ব্রিসবেনের
গ্যাবায় আগামীকাল অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। কিন্তু মার্সিয়ার
ছোবলে উড়ে যেতে পারে এই ম্যাচ। শেষ পর্যন্ত যদি সদয় হয় প্রকৃতি,
বাংলাদেশের প্রতি কোনোভাবেই সদয় হবে না স্বাগতিক দল। ম্যাচটি হলে
বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়ান পেস ব্যাটারি। কাল
খেলা হলে চার পেসার নিয়ে একাদশ সাজাতে পারে অস্ট্রেলিয়া!
গ্যাবার
উইকেটে এমনিতেই দারুণ গতিময় ও বাউন্সি। তার ওপর গত কদিনের টানা বৃষ্টিতে
উইকেট একদম ঢাকা। রোদের ছোঁয়া না পাওয়া আর্দ্র উইকেট ব্যাটসম্যানদের জন্য
কাঁটা সাজিয়ে বসে আছে। আর হাতে ধরে সেই কাঁটায় বাংলাদেশের
ব্যাটসম্যানদের বিঁধতে তৈরি আছেন জনসন-স্টার্ক-কামিন্স-হ্যাজলউড!
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ম্যাচে একাদশে ছিলেন না প্যাট কামিন্স। বাকি তিনজনের
সঙ্গে একাদশে ছিলেন দুই অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ ও শেন ওয়াটসন। তবে
আবহাওয়া আর উইকেটের অবস্থা বিবেচনায় একজন অলরাউন্ডার কমিয়ে চার পেসার
খেলানোর কথা ভাবছে অস্ট্রেলিয়া।
গত পরশু অ্যালান বোর্ডার মাঠে
অস্ট্রেলিয়ার অনুশীলনে বৃষ্টির ফাঁকে ফাঁকে আগুন ঝরিয়েছেন কামিন্স। নেটে
কামিন্সকে খেলে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের অভিজ্ঞতা, ‘মাত্রই নতুন বলে প্যাটকে
খেলে এলাম। আমি বলব, আর কারও যেন এই অভিজ্ঞতা না হয়! আমি যদিও নির্বাচক
নই। তবে প্যাট যেভাবে বোলিং করছে, শনিবার চার পেসার খেলানোর লোভ হওয়াটাই
স্বাভাবিক।’
ড্যারেন লেম্যানও নিশ্চয়ই দুই চোখ খোলা রেখেছিলেন
অনুশীলনে। তবে দলের কোচ তিনি, কৌশল তো আগেই ফাঁস করবেন না! ‘বাড়তি আরেকজন
পেসার খেলাব, না দুজন অলরাউন্ডারই খেলাব, সেই সিদ্ধান্ত নেব ম্যাচের দিন।
আগে তো বৃষ্টি থামুক! তার পর উইকেট-পরিস্থিতি বুঝে একাদশ নিয়ে ভাবা যাবে।’
একাদশ
সাজানো নিয়ে এমনিতেই মধুর কিন্তু জটিল সমস্যায় আছেন লেম্যান অ্যান্ড
কোং। এই ম্যাচ দিয়ে ফেরার কথা মাইকেল ক্লার্কের, বাধ্য হয়ে বাদ দিতে হবে
গত ম্যাচে ফিফটি করা ও দলকে দারুণ জয়ে নেতৃত্ব দেওয়া জর্জ বেইলিকে। তার
ওপর যদি চার পেসার খেলানোর সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে বাদ দিতে হবে ওয়াটসন ও
মার্শের একজনকে। শেন ওয়াটসন এখন ফর্মে না থাকলেও ওয়ানডেতে তিনি
ব্যাটে-বলে বড় ভরসা। মিচেল মার্শ আগের ম্যাচে পেয়েছেন ৫ উইকেট, শেষ দিকে
দ্রুত রানও করেছেন। শেষ পর্যন্ত তাই তিন পেসার আর দুই অলরাউন্ডার খেলার
সম্ভাবনাই বেশি, বিশেষ করে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে গেলে। সে ক্ষেত্রে হয়তো
হ্যাজলউডের বদলে একাদশে ঢুকবেন কামিন্স।
বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ তাতেও
কমছে না। কদিন ঢাকা থাকা উইকেটে জনসন-স্টার্ক-কামিন্সদের খেলতে হবে।
তামিম-মুশফিকদের টেকনিক-সাহসিকতা-চরিত্রের কঠিন পরীক্ষাই হবে গ্যাবায়।
মার্সিয়ার ছোবল তীব্র হলে অবশ্য এমনিতেই জুটতে পারে মহামূল্য একটি
পয়েন্ট! সিডনি মর্নিং হেরাল্ড।more- www.24banglanewspaper.com
