নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ পিএসসির
স্থানীয় সরকার বিভাগে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর শূন্য পদে নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে বলে খোদ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) পক্ষ থেকে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পিএসসির সচিব স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিবকে চিঠি দিয়েছেন। ২৮ ডিসেম্বর পাঠানো এক চিঠিতে পিএসসির সচিব (সরকারের ভারপ্রাপ্ত সচিব) মো. শাজাহান আলী মোল্লা জানান, স্থানীয় সরকার বিভাগের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর বিভিন্ন শূন্য পদে নিয়োগের বিষয়ে ৫ ডিসেম্বর বিভাগীয় নির্বাচন কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় নিয়োগ কমিটির একজন প্রতিনিধি হিসেবে পিএসসি আইন কর্মকর্তা (উপ-পরিচালক) এসএম মাসুদুল হক উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে তিনি নিজ দফতরে ফিরে নিয়মানুযায়ী প্রতিবেদন দাখিল করেন। সেখানে তিনি সুস্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, নিয়োগ কমিটির সভাপতি বেআইনি বা অন্যায় সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়াসহ নিয়োগ কমিটির বাইরের সদস্য স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে দিয়ে লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন প্রস্তুত করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। তবে পিএসসির প্রতিনিধি হিসেবে তার প্রবল আপত্তি ও দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত ওই চেষ্টা সফল হয়নি। তিনি মনে করেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের এ নিয়োগ প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ ও দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে এবং এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ সর্বোতভাবে জড়িত।প্রসঙ্গত, এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের অধীন স্থানীয় সরকার বিভাগে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর ২৭টি পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১৬ ডিসেম্বর। এতে সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার পদের জন্য ১৩টি শূন্যপদে লিখিত পরীক্ষায় ৪৩৪ জন ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন ১১৪ জন। কম্পিউটার অপারেটরের ১টি পদের জন্য লিখিত পরীক্ষায় ৩৩ জন এবং মৌখিক পরীক্ষায় ৮ জন অংশ নেন। হিসাব রক্ষকের ১টি পদের বিপরীতে ১১৫ জন লিখিত পরীক্ষায় ও ৪ জন মৌখিক পরীক্ষায় এবং অফিস সহায়কের ১০টি পদের জন্য লিখিত পরীক্ষা দেন ৫০৩ জন। এতে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন ১৯২ জন। অভিযোগ রয়েছে, তদবিরের তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের প্রত্যেকের কাছ থেকে একটি চক্র চাকরি দেয়ার জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর বিনিময়ে লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন আগেই গোপনে সরবরাহ করা হয়। এতে করে তারা লিখিত পরীক্ষায় বেশি নম্বর পেয়ে পাস করেন এবং মৌখিক পরীক্ষায় আরও বেশি নম্বর পেয়ে খুব সহজেই নিয়োগ নিশ্চিত করেন। ঘুষের টাকা আদায়কারী চক্রের সঙ্গে নিয়োগ কমিটির প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে। বিষয়টি এখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সবার মুখে মুখে। এমনকি নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে সেখানে মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার উপস্থিত থাকা নিয়েও কঠোর সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে।www.24banglanewspaper.com