খালেদা
জিয়া বর্তমানে বন্দীই এবং খুব শিগগিরই বাসে আগুন দিয়ে যাত্রী হত্যার দায়ে
আসামি হতে পারেন বাংলাদেশের সরকারবিরোধী ২০ দলীয় এই জোট নেত্রী। আজ এমন
রিপোর্ট করেছে ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান অনলাইন ও আর্লি
মর্নিং এবং কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা।
গার্ডিয়ানের
রিপোর্ট বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে বাসে আগুন দিয়ে তিনজন যাত্রীকে হত্যা করেছে
বিএনপির কর্মী সমর্থকরা। আর এতে নির্দেশ দিয়েছেন বেগম জিয়া। গার্ডিয়ানে এই
রিপোর্ট প্রকাশের কিছু আগে ভারতের কোলকাতা থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার
পত্রিকার লিড নিউজেও একই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।আনন্দবাজারে প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপার্সন বর্তমানে বন্দীই, তার বিরুদ্ধে আনা হতে পারে খুনের মামলা।উভয়
রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত সোমবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহিংস
ঘটনাবলীর জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে দোষারোপ করে বক্তব্য রেখেছেন। এদিকে
মঙ্গলবার তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন,
বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে খুনের মামলা হতে পারে।গার্ডিয়ানের
রিপোর্টে বলা হয়েছে, বেগম জিয়া গত শনিবার থেকে গুলশানে তার রাজনৈতিক
কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। তার কার্যালয়ের সম্মুখের রাস্তায় বালু ও ইট
ভর্তি ট্রাক রেখে তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতো কিছুর পরেও বেগম জিয়া
আপোসহীন।২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি
একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পুনরায় ক্ষমতারোহনের বার্ষিকীতে
দেশব্যাপী অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধের ডাক দিয়েছেন।এদিকে
গার্ডিয়ানের রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, লন্ডনে নির্বাসিত বেগম জিয়ার ছেলে ও
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য বাংলাদেশের একটি
বেসরকারি টিভি চ্যানেল ইটিভি সরাসরি সম্প্রচার করে। এ কারণে চ্যানেলটির
পরিচালককে গ্রেফতার করেছে সরকার। পরে তার বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফির অভিযোগ
আনা হয়।গার্ডিয়ান ও আনন্দবাজার একই
সূত্রের বরাত দিয়ে লিখেছে, বেগম জিয়ার ছেলে (তারেক রহমান) হাসিনা সরকারের
সমালোচনা বিশেষ করে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করার পর
থেকে সরকারের রোষানলে পড়েন, প্রধান টার্গেটে পরিণত হন।গার্ডিয়ান
তাদের প্রতিবেদনের সবশেষে লিখেছে, শেখ হাসিনা এবং বেগম খালেদা জিয়া বিগত
তিন দশক ধরে বাংলাদেশ শাসন করছেন অথচ দুই পরিবারের মধ্যে সাপে-নেউলে
সম্পর্ক। কেউ কাউকে সহ্য করতে পারে না। হাসিনা ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসেন।
পুনরায় গত বছর ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসীন হন। যা বেগম
জিয়ার নেতৃত্বাধীন জোট বয়কট করেছিলো। তাদের দাবি নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি
হয়েছে।এছাড়া আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে
আরো বলা হয়, বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়াকে মঙ্গলবারও বন্দী রাখল বাংলাদেশ
পুলিশ। কবে তাকে মুক্তি দেওয়া হবে? সাংবাদিকদের প্রশ্নের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আসাদুজ্জামান খান জানান, বিরোধী নেত্রীর নিরাপত্তার স্বার্থেই তাকে আটকে
রেখেছে পুলিশ। পুলিশ যখন মনে করবে, তার জীবন বিপন্ন নয়, তখন তিনি নিজের
বাড়ি যেতে পারবেন।ঢাকার গুলশান এলাকার বিএনপি দফতরে দু’দিন ধরে খালেদা জিয়াকে আটকে রেখেছে পুলিশ।তবে
গত দু’দিনের মতো মঙ্গলবারও উত্তপ্ত থাকল বাংলাদেশ। বিএনপির লাগামছাড়া
হিংসায় কাল থেকে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশের জনজীবন। কালকের
হিংসায় চার জনের মৃত্যু হয়েছিল। সরকার-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের তাণ্ডবে
উত্তপ্ত ছিল রাজধানী লাগোয়া ডেমরা শহরতলি এলাকা। সেখানে শাসক দল আওয়ামী
লিগের একটি অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয় বিরোধী দল বিএনপি-র সমর্থকেরা। কদমতলি
এলাকায় এক আধাসেনা গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা তার ভ্যানে আগুন
জ্বালিয়ে দিলে জখম হন তিনি।
www.24banglanewspaper.com