গ্রেফতারের মহোৎসবে মেতেছে সরকার
অবৈধ সরকার সারা দেশে গ্রেফতারের মহোৎসবে মেতে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকার আমাকে রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবরুদ্ধ রেখে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেফতারসহ দেশব্যাপী একই কায়দায় গ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে। কেবল বিএনপির নেতাকর্মীই নয়, সাধারণ মানুষও এখন পুলিশি আতংকে দিনাতিপাত করছে।’ মঙ্গলবার রাতে বিএনপির সহদফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিতদের প্রতি জনগণের ন্যূনতম সমর্থন নেই বলেই তারা আইনশৃংখলা বাহিনী দিয়ে এবং রাষ্ট্রক্ষমতার অপব্যবহার করে জনগণের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের মাত্রা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। দেশের জনগণকে ভোটারবিহীন অবৈধ সরকারের সব অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। একইসঙ্গে মির্জা ফখরুলসহ সব রাজবন্দির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান খালেদা জিয়া।মির্জা আলমগীরকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমদ। মঙ্গলবার তার বিশেষ সহকারী গোলাম মোস্তফা গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানান। এছাড়া ফখরুলকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন খেলাফত মজলিসের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. সফিকুর রহমান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতারা।এদিকে ‘একুশে টিভি’র চেয়ারম্যান আবদুস সালামকে গ্রেফতারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার দলের সহদফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি স্বাক্ষরিত অপর এক বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, গণতান্ত্রিক সভ্যসমাজে স্বাধীন মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা স্বীকৃত গণতান্ত্রিক অধিকার। বর্তমান সরকারের আমলে জনগণের সব অধিকার ফ্যাসিবাদী কায়দায় হরণ করা হয়েছে। রুদ্ধ করা হয়েছে নির্ভিকভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে। এখন সব গণমাধ্যমকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। বিরোধী দল ও মত দমনে এ ধরনের অন্যায় ও ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ড গণতন্ত্রের জন্য কখনোই শুভ নয়। আবদুস সালামের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন তিনি।গুলশান কার্যালয়ে এখনও অবরুদ্ধ খালেদা জিয়া : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মঙ্গলবারও তার গুলশানের কার্যালয়ে অবরুদ্ধ রয়েছেন। সোমবার রাতে সেখানে নিরাপত্তা কিছুটা শিথিল করা হলেও মঙ্গলবার সকালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আবারও জোরদার করা হয়। কার্যালয়ের প্রধান ফটকটি এখনও তালা লাগানো। পুলিশের অনুমতি ছাড়া কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন না।গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এমাজউদ্দিন আহমেদসহ কয়েকজন তার সঙ্গে দেখা করেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে কর্মসূচির ব্যাপারে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, তিনি তো রাজনীতি করেন না। তাই রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কর্মসূচির বিষয়ে তিনি (খালেদা) তার রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এ সময় তার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক রাশেদুল হাসান। অসুস্থতার কারণে বিকালে ইজতেমা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দেখা করেননি খালেদা জিয়া।কার্যালয়ের চারপাশে সোমবার রাতের তুলনায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। জলকামানের গাড়িটি রাতে কার্যালয় থেকে দূরে সরানো হলেও গতকাল আবার ঠিক মূল ফটকের পাশেই আনা হয়েছে। কার্যালয়ের পাশ দিয়ে গুলশান লেকের যে রাস্তাটি রয়েছে, সেখানেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। www.24banglanewspaper.com