শিরোনাম
Loading...

news review 1

reveunis 2

Phone-Video

মঙ্গলবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১৫

আপিল বিভাগের রায়

রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম (ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স) সংক্রান্ত মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের আপিল বিভাগ মঙ্গলবার এ রায় দেন। সংক্ষিপ্ত আদেশে আপিল বিভাগ বলেন, ‘আপিল ডিসপোজসড অব ইউথ মোডিফিকেশন, অবজারভেশন অ্যান্ড ফাইন্ডিংস। ২০০৬ সালে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০১০ সালে বর্তমান ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স-১৯৮৬’ অবৈধ ঘোষণা করে ৮ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল মঙ্গলবার নিষ্পত্তি করে রায় দেয়া হয়েছে। রায়ে কি থাকছে, তা পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি প্রকাশিত হওয়ার পর জানা যাবে। তবে রায়ে রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমে কার অবস্থান কোথায় রাখা হবে- তা নিয়ে আদালত আইনজীবীদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছেন।বিচারকদের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, আদালতের মৌখিক রায়ের সারমর্ম হচ্ছে, এখন থেকে প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমের তিন নম্বর অবস্থানে স্পিকারের সঙ্গে থাকবেন। একই তথ্য জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ আইনজীবী আবদুর রব চৌধুরী। জানা গেছে, ১৯৭৫ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে প্রধান বিচারপতির পদমর্যাদাক্রম স্পিকারের সঙ্গে তিন নম্বর ক্রমিকেই ছিলেন। কিন্তু ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে সেটা পরিবর্তন করে প্রধান বিচারপতিকে চার নম্বর ক্রমিকে রাখা হয়।আইনজীবী আসাদুজ্জামান আরও জানান, আদালতের মৌখিক রায় অনুযায়ী আপিল বিভাগের বিচারপতিরা এখন থেকে কেবিনেট মিনিস্টারের অবস্থানে থাকবেন। যদিও এর আগে আপিল বিভাগের বিচারপতিরা ছিলেন প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায়।এছাড়া হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা প্রতিমন্ত্রীদের সম-অবস্থানে থাকবেন বলে জানান এই আইনজীবী। সাংবিধানিক পদাধিকারী হওয়ায় রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলের অবস্থান হবে প্রজাতন্ত্রের সব সচিবের ওপরে। নির্বাচিত প্রতিনিধি হওয়ায় এমপিদের অবস্থান থাকবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান এবং মুখ্য সচিবের ওপরে। বর্তমান ক্রম-অনুযায়ী এমপিদের অবস্থান তাদের এক ধাপ নিচে। এছাড়া অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলরা হবেন সচিব পদমর্যাদার। আর জেলা জজরা যেহেতু অধস্তন আদালতের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা, তাই তাদের অবস্থান হবে প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা অর্থাৎ সচিব পদমর্যাদার।আইনজীবী আসাদুজ্জামান আরও বলেন, হাইকোর্ট বর্তমান ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স বাতিল করে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে আপিল দায়েরের পর হাইকোর্টের রায়টি স্থগিত করা হয়।রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমের তালিকায় বেশ নিচের দিকে অবস্থান রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকারী বিচারকদের। ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের ২৪ নম্বর ক্রমিকে জেলা ও দায়রা জজদের অবস্থান। একই অবস্থানে রয়েছে প্রশাসনের ডেপুটি কমিশনারদের (ডিসি) অবস্থান। আর ১৬ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদ ‘সচিব’দের অবস্থান। সাংবিধানিক পদধারী হওয়া সত্ত্বেও রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমে নিচের দিকে থাকার কারণে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ বিচারকদের মাঝে। আর এ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে ২০০৬ সালে। ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের বৈধতার প্রশ্ন তুলে বিচারকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন’র পক্ষে তৎকালীন মহাসচিব বিচারক মো. আতাউর রহমান হাইকোর্টে রিট করেন। এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০০৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট জেলা জজদের মর্যাদা সচিবদের নিচে দেখানো কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তার কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এ রুলের দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন।পাশাপাশি বিচারকদের পদমর্যাদাক্রম ঠিক করে নতুনভাবে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করতে বলেন। ওই রায়ে ৮ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়। এসব নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে- সকল সাংবিধানিক পদ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথমে রাখতে হবে। তারপর যাবে সংবিধান স্বীকৃত পদসমূহ। যেমন- জেলা জজ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ। সংবিধানে জেলা জজ বলতে যেহেতু অতিরিক্ত জেলা জজও বোঝায় তাই অতিরিক্ত জেলা জজ, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদেও জেলা জজদের পরপরই রাখতে হবে। এরপর রাখতে হবে প্রজাতন্ত্রের সচিবদের।রায় ঘোষণার ৬০ দিনের মধ্যেই নতুন ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স প্রণয়ন করে তা ওই বছরের ১৩ মে তারিখের মধ্যে এফিডেভিটের মাধ্যমে হাইকোর্টকে জানাতে বলা হয়। হাইকোর্টের এ রায় বাস্তবায়ন করলে প্রশাসনের মধ্যে অস্থিতিশীলতা ও বিশৃংখলার সৃষ্টি হবে- এমন দাবি করে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আপিল করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ৮ ফেব্র“য়ারি আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে দেন। সেই আপিলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে মঙ্গলবার রায় হয়। রায়ে আপিলটি খারিজও করেননি আবার মঞ্জুরও করেননি। নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন। মৌখিকভাবে বলা আপিল বিভাগের কিছু নির্দেশনার বিষয় সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন বিচারকদের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান ও রাষ্ট্রপক্ষে বিশেষভাবে নিযুক্ত আইনজীবী আবদুর রব চৌধুরী।www.24banglanewspaper.com

Related Post:

  • 0Blogger Comment
  • Facebook Comment

pop Earnings