আর মাত্র দুটি জয়
ঘরের
মাঠে খেলা। চ্যাম্পিয়ন ট্রফির ওপরেই দৃষ্টি মামুনুলদের। মাত্র দুটি ম্যাচ
জিতলেই ট্রফি উঠবে বাংলাদেশের ঘরে। সেই সাফল্যের পথে প্রথম বাধা থাইল্যান্ড
অনূর্ধ্ব-২২ দল। বঙ্গবন্ধু কাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আজ থাই যুবদলের
মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। বিকেল পাঁচটায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলা
শুরু হবে। চ্যানেল নাইন ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে।
মালয়েশিয়া
অনূর্ধ্ব-২১ দলের কাছে হারলেও শ্রীলংকাকে একমাত্র গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে
জায়গা করে নেয় লাল-সবুজরা। ফাইনালের পথে একধাপ এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ
থাইল্যান্ডকে হারালেই বাজিমাত। ফুটবলার ও কর্মকর্তাদের চোখে-মুখে একটাই
স্বপ্ন- ফাইনাল খেলা। আর এই স্বপ্ন সফল হওয়ার পেছনে প্রেরণা জোগাচ্ছে
থাইল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দলটি। থাই জাতীয় দলের সঙ্গে বাংলাদেশ পেরে না
উঠলেও বয়সভিত্তিক দলটিকে হারানো কোনো কঠিন কিছু নয় বলে মনে করছেন
খেলোয়াড়রা। কোচ ও অধিনায়কের কণ্ঠেও আত্মপ্রত্যয়ের সুর। যদিও থাই জাতীয় দলের
সঙ্গে বাংলাদেশের জয়-পরাজয়ের পরিসংখ্যানটা মোটেও সুখকর নয়। ১৪ ম্যাচের
মধ্যে নয়টিতেই জিতেছিল থাইল্যান্ড। তিনটি ম্যাচ ড্র হয়। বাংলাদেশ জেতে
মাত্র দুটি ম্যাচে। ১৯৯৩ সালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ দু’দফাই ৪-১ গোলের
ব্যবধানে হারে। প্রায় ১৯ বছর পর ২০১২ সালে সর্বশেষ সাক্ষাতে ফিফা প্রীতি
ম্যাচে বাংলাদেশের জালে পাঁচ গোল দেয় থাইরা। বঙ্গবন্ধু কাপে থাই জাতীয় দল
না আসায় জয়ের স্বপ্ন দেখছেন কোচ ডি ক্রুইফ। রণ প্রস্তুতি নিয়েছে দু’দলই।
বাংলাদেশ দল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন করে। থাইরা ধানমণ্ডি ক্লাব
মাঠে ঘাম ঝরিয়েছে। বৃহস্পতিবার হোটেল সোনারগাঁয়ে ম্যাচ-পূর্ববর্তী সংবাদ
সম্মেলনে বাংলাদেশের ডাচ কোচ বলেন, ‘ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য খুবই
গুরুত্বপূর্ণ। কোচ হিসেবে আমার জন্যও। সেমিফাইনালে জিতেই ফাইনালে পা রাখতে
চাই। খেলোয়াড়দেরকে আমি সেই বার্তা দিয়েছি। তাদের প্রতি আমার বার্তা হচ্ছে,
টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলতে হবে তোমাদের। থাইল্যান্ডকে হারাতেই হবে। আমার
বিশ্বাস, ছেলেরা তা পারবে।’ ক্রুইফের কথা, ‘আমার আগে মনে হয়েছিল বাহরাইন
টুর্নামেন্টে ফেভারিট। এখন দেখলাম থাইল্যান্ডই ফেভারিট। তারা খুবই
শক্তিশালী এবং তারুণ্যনির্ভর দল। আমাদের লক্ষ্য মাচ বাই ম্যাচ ভালো খেলে
ফাইনালে জায়গা করে নেয়া। সেমিফাইনালে জায়গা পেয়ে তার প্রমাণ দিয়েছি।’
সেমিফাইনালে দলে পরিবর্তন আসবে কিনা- প্রশ্নের জবাবে কোচ বলেন, ‘ম্যাচের
আগেই ঠিক করব প্রথম একাদশ নিয়ে। এই মুহূর্তে একাদশ নিয়ে ভাবছি না।’অধিনায়ক
মামুনুলের কথা, ‘আমরা প্রস্তুত। ফাইনালে খেলবোই। থাইল্যান্ডকে হারাতে
উন্মুখ হয়ে আছি। ফুটবলাড়রা মানসিকভাবে চাঙ্গা। তারা আরও বেশি উজ্জীবিত হবে
সেমিফাইনালের বাধা পেরুতে পারলে। জয়ের জন্য দলের ১১ জনকেই নিজেদের শতভাগ
দিয়ে চেষ্টা করতে হবে মাঠে। দিনটা আমাদের করে নিতে হবে। তাহলেই জিতব আমরা।’
অধিনায়কের কথা, ‘আমরা জানি, মালয়েশিয়া যুবদলের কাছে হারের পর যে সমালোচনা
হয়েছে, সেমিফাইনালে হারলে তার চেয়ে দ্বিগুণ সমালোচনা হবে। তবে এটাকে বাড়তি
চাপ মনে করছি না। কাউকে সমালোচনার সুযোগ দিতে চাই না। থাইল্যান্ডের
বিরুদ্ধে নিজেদের সেরা খেলাটা খেলেই জয়তুলে নেব।’বাংলাদেশ
দল যখন ফাইনাল খেলতে প্রত্যয়ী, তখন থাইল্যান্ড বঙ্গবন্ধু কাপ নিয়ে কোনো গা
করছে না। কোনো লক্ষ্য ছাড়াই এই টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে থাইরা। খেলার শুরু
থেকেই বলে আসছে, বঙ্গবন্ধু কাপে খেলতে এসেছে তারা অলিম্পিক বাছাইয়ের
প্রস্তুতি হিসেবে। বৃহস্পতিবার একই কথার পুনরাবৃত্তি করলেন থাই কোচ চোকতাভি
ফোমরাত। তার কথা, ‘বাংলাদেশ স্বাগতিক দল। শক্তিশালী। বাংলাদেশ জাতীয় দলের
বিরুদ্ধে আমরা খেলছি অনূর্ধ্ব-২২ দল নিয়ে। আমাদের লক্ষ্য অলিম্পিকের
বাছাইপর্বের প্রস্তুতি। তারপরও টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ওঠেছি এটাই বড়
পাওনা। আমি ছেলেদের বলেছি, তোমরা ভালো ফুটবল খেলবে।’ কোচের কথা, ‘হোম
ভেন্যু হিসেবে বাংলাদেশ বাড়তি সুবিধা পাবে। অনেক দর্শক থাকবে। তারা
চিৎকার-চেঁচামেচি করবে- এই ভেবে আমার ফুটবলাররা কিছুটা ভীত। তবে মানসিক
কোনো চাপ অনুভব করছি না।’ থাই অধিনায়ক পার্মপাক পাকর্ন বলেন, ‘প্রতিপক্ষ
অনেক শক্তিশালী। তবে আমরা প্রস্তুত তাদের মোকাবেলা করতে। মাঠে নিজেদের শত
ভাগ উজাড় করে খেলে জয় পেতে চেষ্টা করব।’ - See more at: www.24banglanewspaper.com