শিরোনাম
Loading...

news review 1

reveunis 2

Phone-Video

রবিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

মেঘের একটি রাতও কাটেনি দাদির সঙ্গে!

একমাত্র ছেলেকে (সাগর) হারিয়ে পাগলপ্রায় সালেহা মনির। তারপরও নাতি মেঘকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে ছেলে হারানোর বেদনা কিছুটা হলেও ভুলতে চেয়েছেন বারবার। কিন্তু গত ৩ বছরেও সে সুযোগটি তাকে দেয়া হয়নি। একটি রাতও মেঘকে কাছে নিয়ে ঘুমাতে পারেননি তিনি। আর সে দিনের সেই রাতের ঘটনা মেঘের মুখ থেকে শোনার প্রবল আকাঙ্ক্ষা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। অজানা ভয় ও শংকার কারণে সাগরের মা নাতিকে কাছে পেতে বেশি জোরাজুরিও করতে পারেননি। এমনকি ওই রাতের ঘটনার বিষয়ে রুনীর মায়ের পরিবারের কেউ কিছু জানেন কিনা, সে প্রশ্ন করার সাহসও হারিয়েছেন। যুগান্তর অনুসন্ধানী টিমের কাছে কাঁদতে কাঁদতে এমনই মর্মস্পশী বর্ণনা দেন সাগরের মা। শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে মেঘের দাদি জানান, ‘তিনি এবং তার মেয়ে বহু চেষ্টা করেও মেঘের সঙ্গে একান্তে কথা বলতে পারেননি। মাঝেমধ্যে যেটুকু দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে সেখানে হয় মেঘের মামা রোমান, না হয় রুনীদের পরিবারের কেউ না কেউ ছিল।’অজানা অনেক কথা : সম্প্রতি যুগান্তরের অনুসন্ধানী সেলের টিম সাগরের মা সালেহা মনিরের মুখোমুখি হয়। সেখানে সাগরের এক বোনও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় একটি সূত্রের দেয়া ক্লু অনুযায়ী শুরুতে জানতে চাওয়া হয়, ‘মেঘের কাছ থেকে কখনও কি জানতে পেরেছেন সেদিন রাতে কী ঘটেছিল? কিছুটা দম নিয়ে তিনি জানান- না, না। সেটা বলার কখনও সুযোগ দেয়া হয়নি। আমি কোনো স্কোপই (সুযোগ) পাইনি। আমার কাছে তো দেয়াই হয়নি মেঘকে।’ ঘটনা জানার কোনো সুযোগ পেয়েছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না। ইমপসিবল। এটা কী করে সম্ভব। জানতে হলে তো মেঘকে আমার কাছে দিতে হবে। কিন্তু তারা একা কখনও মেঘকে আমার কাছে দেয়নি।’ এ সময় সালেহা মনির একটু দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলেন, ‘আমি চাই, মেঘ আমার কাছেও থাকুক, ওদের কাছেও থাকুক।’এরপর কিছুক্ষণ চুপ থেকে তিনি বললেন, ‘আমার যে কত কষ্ট, আমার মেঘকে একটু বুকে নিয়ে সাগরকে অনুভব করতে চাই। কিন্তু পারিনি।’ এ কথা বলেই কাঁদতে থাকেন সাগরের মা। কান্না থামিয়ে আবার বলেন, ‘কতবার বলেছি, রোমানরে একটা রাতের জন্য আমার কাছে মেঘ কে রেখে যা। এ সময় রোমান বলে, খালাম্মা ও (মেঘ) ভয় পায়।’সাগরের মা বলেন, ‘মেঘ আমার কাছে মনের কথা বলতে চাইত। কিন্তু কোনো এক অজ্ঞাত কারণে পারত না। তিনি বলেন, একদিন রুনীর মা আর আমি একসঙ্গে গাড়িতে করে যাচ্ছিলাম। সেখানে পুলিশও ছিল, অনেকেই ছিল। তখন আমি কথা বলতে বলতে এক পর্যায়ে বললাম, আপা যারা আমাদের বুক খালি করেছে তাদের বিচার একদিন হবেই। এর উত্তরে রুনীর মা বললেন, এটা আর কোনোদিন বের হবে না। তবে আমি কিন্তু তাকে বলেছিলাম, বের একদিন হবেই। সাগর যদি সৎ পিতার সন্তান হয়ে থাকে তাহলে খুনিরা একদিন ধরা পড়বেই, ইনশাআল্লাহ।’এরপর সাগরের মাকে তেমন কোনো প্রশ্ন করতে হয়নি। একে একে তিনি জানাতে থাকলেন অজানা সব বিস্ময়কর তথ্য আর রাখলেন কৌতূহলী নানা প্রশ্ন। যেন দীর্ঘদিন বুকের ভেতরে পাথরচাপা দিয়ে রাখা অজস্র কথা বাঁধভাঙা স্রোতের মতো বেরিয়ে আসতে থাকে।শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে তিনি বললেন, ‘আমি যদি বলি, ঘরের ভেতরই এ ঘটনা ঘটেছে। র‌্যাবের একজন কর্মকর্তাও (নাম প্রকাশ করা হল না) আমাকে বলেছেন, তিনি যদি বেঁচে থাকেন তাহলে এটা বের করেই ছাড়বেন। তিনি আমার কাছে দোয়াও চেয়েছিলেন। আমিও তার মাথায় হাত দিয়ে দোয়া করেছি।’দরজা খোলা প্রসঙ্গে সাগরের মা বলেন, ‘সাগরের বাসার দরজা ছিল অনেক উঁচু। অথচ বলা হচ্ছে, এত বড় ভারি সোফা টেনে নিয়ে নাকি সে (মেঘ) দরজা খুলে দিয়েছে। রুনীর সব কিছু অক্ষত আছে। সাগরের ফোন, ল্যাপটপ, আইফোন খোয়া গেছে।’ তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘মা-বাবার লাশ দেখে ওইটুকু বাচ্চা কী ফোন দিতে পারে, এটা ইমপসিবল। আর কোনো মানুষের পক্ষে গ্রিলের কাটা অংশ দিয়ে বের হওয়াও সম্ভব নয়।’ সাগরের মায়ের প্রশ্ন- ‘এটার ভেতরে (ঘর) কোনো লোক না থাকলে কেউ সিটকানি লাগাতে পারে? ধরলাম, চোররা চলে গেছে। তাহলে মেঘ কি চোরদের বলেছে, চোররা আপনারা চলে যান। আমি ছিটকিনি লাগিয়ে দেব। নাকি রুনী-সাগর মরা থেকে উঠে এসে ছিটকিনি লাগিয়ে দিছে? এটাই আমার প্রশ্ন।’সাগরের মা আরও জানান, র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা আমাকে বলেছেন, গ্রিলের ভাঙা অংশ দিয়ে বের হয়ে পাঁচতলা থেকে কোনোভাবেই কারও পক্ষে নামা সম্ভব না। তাহলে তার প্রশ্ন- ঘরে কে ছিল? আবার এটাও সত্য যে, খুনিরা কখনও কোনো সাক্ষী রেখে যায় না। আলামত রেখে যায় কি? তাহলে মেঘকে কে বাঁচাল? খুনিরা কী এত হৃদয়বান?’সাগরের মা বলেন, ‘মেঘ আলাদা ঘুমাত। ওর নানী আমাকে বলেছে, আমি প্রতিদিন মেঘের সঙ্গে থাকি, আজ (ঘটনার রাতে ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১২) থাকি নাই। কিন্তু কেন সে থাকল না? আমার প্রশ্ন এখানেই। আর হ্যাঁ, আমি ধরে নিলাম, মেঘ তার নানীকে ফোন করেছে (ঘটনার পর নানীর কাছে)। কিন্তু রুনীর মোবাইলটি তো তার মৃত দেহের কাছে পড়ে ছিল। তাহলে মেঘকে অবশ্যই রক্তের ভেতর দিয়ে হেঁটে যেতে হয়েছে। আর মেঘের পায়ে তো কোনো জুতা ছিল না। তাহলে মেঘের পায়ের তলায় থাকা রক্ত অবশ্যই ফ্লোরে থাকবে। এছাড়া মেঘ যে সোফার ওপরে দাঁড়াল, তা ছিল অফ হোয়াইট কালারের। সেখানে তো মেঘের রক্তের দাগ থাকবে। মোবাইলটা যেহেতু সে হাত দিয়ে তুলেছে তাহলে ছিটকিনিতে রক্তের দাগ থাকবে। পায়ে রক্তের দাগ থাকবে। এগুলো কোথায়? আমরা তো গিয়ে এসব জায়গায় রক্তের দাগ পাইনি।’সাগরের মা আরও বলেন, ঘটনার পর আমি যখন ওই বাসায় যাই (সকাল সাড়ে ৯টার দিকে), তখন রোমান (মেঘের মেজ মামা) মেঘকে নিয়ে চলে যাচ্ছিল। আমি জানি না, মেঘকে লুকাতে যাচ্ছিল কিনা। ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাচ্ছে কিনা। তারা তিন ভাই। সোয়েটার পরা। আমার কাছে এখনও ফুটেজ আছে। শোক যে একটা জিনিস, সে সময় তাদের মধ্যে তা আমি দেখিনি। তখন সঙ্গে থাকা আমার এক মেয়েকে বললাম, ওরা আমার মেঘকে নিয়ে যাচ্ছে? আমার মেঘ বেঁচে আছে। আমি তো মনে করছি, মেঘকেও বোধহয় মেরে ফেলা হয়েছে। তখন আমার মেয়ে রোমানের শার্ট টেনে ধরে বলল, তুই মেঘকে নিয়ে কোথায় যাস? কিন্তু মেঘকে আমাদের কাছে দিল না। তিনি বলেন, ‘রোমান মেঘকে আমার মেয়ের হাত থেকে যেন কেমনে করে ছুটাই নিল। রোমান তখন বলতাছিল, মেঘকে ডাক্তারের কাছে নিতে হবে। ওর সমস্যা হয়েছে। এরপর রোমানকে আমার মেয়ে যতবারই ধরতে যায় ততবারই রোমান তাকে ছিটকে ফেলে দেয়।’ উল্লেখ্য, সাগরের বোন জানান, ঘটনার পর সাগরদের বাসায় যাওয়ার পর অনুভব করেছি শোক যে কি জিনিস তা ওদের মধ্যে দেখিনি।সাগরের এক বোন যুগান্তরকে বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে আমিই সবচেয়ে বেশি রোমানদের বাসায় যাই। কিন্তু আমি মেঘের কাছ থেকে কিছুই জানতে পারিনি। কারণ, রোমানতো সব সময় মেঘের সঙ্গে সঙ্গে লেগে থাকে। তবে মেঘ আমাকে বলেছে, দুইটা ভূত এসে মেরে গেছে। বাবা ভূতের সঙ্গে মারামারি করতেছিল। ভূত দুইটা বাবা-মাকে মেরে রেখে চলে গেছে। সোজা কথা, মেঘের ব্রেনওয়াশ হয়ে গেছে। রোমানকে দেখলে, মেঘ কেমন যেন হয়ে যায়।’সাগরের এ বোন আরও বলেন, ‘আমি মেঘকে দেখতে ওদের বাসায় গেলে রোমান কেমনে যেন টের পায়। আমরা যখন যাব এমন সংবাদ পাবার পর রোমান মেঘকে সরিয়ে ফেলত। আমরা যখনই যেয়ে জিজ্ঞাসা করি, মেঘ কোথায়? তখনই বলা হয়, মেঘ বাইরে গেছে। যাবার পর রোমান পাঁচ মিনিটের মধ্যেই যেন কোত্থা থেকে চলে আসে। এসেই বলে, ‘এই মেঘ চল। রেডি হও। বাইরে যাব। তখন নিরূপায় হয়ে আমি কান্নাকাটি করতে করতে চলে আসি।’এদিকে সাগরের মা বলেন, ‘ওদের ফ্যামিলি থেকে বলা হয়, খুন হওয়ার দিন সকালে মেঘ ফোন দিলে মেঘের নানু আসে। পরে মেঘ দরজা খুলে দেয়। কিন্তু এসব বিষয়ে নিয়ে আমরা কাউকে কিছু জিজ্ঞাসা করিনি। কার কাছে জিজ্ঞাসা করব? ঘাড়ের নিচে কয়টা মাথা আছে। একটাই মাথা।’ আসলে মেঘ দরজা খোলার যে তথ্য ওদের ফ্যামিলি থেকে বলা হচ্ছে তা মিথ্যা। আমার মেঘ দরজা খুলতে পারে না।সাগরের এক বোন জানান, ঘটনার ৭ মাস আগেও সাগর-রুনীরা মেঘের নানীর পরিবারের সঙ্গে থাকত। কিন্তু যখন সাগর আলাদা বাসায় চলে যেতে চাইল তখন তুমুল ঝগড়া লাগায় রোমান। সেদিন রোমান অকথ্য ভাষায় সাগরকে বকাঝকা করেছিল। তখন রুনী রোমানের বকাঝকার প্রতিবাদ করে বলেছিল, কেন তুমি আমার হাসবেন্ডকে বকাঝকা করবে। ওর (সাগর) কি কোনো দাম নেই? ওই দিন একমাত্র রোমানের সঙ্গে ঝগড়া করেই আলাদা বাসা (ঘটনাস্থল) নেয় সাগর। রুনীর ভাবী রাজনের (রুনীর বড় ভাই) স্ত্রী তাদের এ কথা বলে দেয়।অপর এক ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে সাগরের মা যুগান্তরকে বলেন, ‘সাগর জাপান থেকে আসার পর রুনী-সাগর দু’জনই আমাকে বলেছে, তাদের বাসা থেকে ৮০ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। এরপর একদিন বাসার চাবিও হারিয়ে যায়। এ কথা রুনীই আমাকে বলেছিল। আর সাগর বলেছিল, বাসায় কে যেন আসে। চানাচুর খায়। ফ্রিজ খুলে কোক খায়। ঘরের ভেতর কেউ যে আসে তা আমরা অনুভব করি। আবার কয়েকদিন পর সাগর বলেছে- মা, চাবি পাওয়া গেছে। যেখানে ছিল সেখানেই পাওয়া গেছে। এ সময় বাসায় শোকেসের ওপর রাখা মাটির ব্যাংক পাওয়া যায়নি। ওই সময় সাগর বলেছিল, মা জাপানি ইয়েন রেখেছিলাম তাও পাইনি। বাসা থেকে খোয়া যাওয়া ওই ইয়েনের মূল্য বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৮০ হাজার টাকা। এ কথা আমি র‌্যাবের কাছেও বলেছি।’প্রধানমন্ত্রীকে যা বলেছিলেন : ঘটনার কয়েকদিন পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দুই পরিবারের সদস্যরা দেখা করতে যান। সে সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কী কথা হয়েছিল জানতে চাইলে সাগরের মা বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে কানে কানে বলে এসেছিলাম, আপা ওদের (রুনীর পরিবার) ফলো করবেন। প্রধানমন্ত্রী যখন আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন তখনই এ কথাটি বলেছিলাম। আরও বলেছিলাম, আপা আপনার একটি সন্তান জয়, আর আমার একটি সন্তান সাগর। আপনি দেখেন এ হত্যাকাণ্ড কারা ঘটাল। তখন প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছিলেন, আমি দেখব। তখন মেঘকে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আজ থেকে মেঘের দায়িত্ব আমার।’জামার্নিতে যাওয়ার আগে সেই স্মৃতি : সাগরের মা যুগান্তরকে জানান, ‘সাগর যখন জার্মানিতে যায় তখন আমি বলেছিলাম, বাবা তুই যে জার্মানিতে যাবি- আমি মারা গেলে তো একমুঠো মাটিও আমার কবরে দিতে পারবি না। তখন সাগর বলেছিল, মা তখন মনের টানেই আমি একাই চলে আসব। আমি কি টাকার জন্য যাচ্ছি মা? আমি যাচ্ছি সুখের জন্য। আমি দূরে গেলে তোমাকে আরও বেশি করে কাছে পাব।’ এ স্মৃতি মনে আসতেই ঝরঝর করে কেঁদে ফেললেন সাগরের মা। চোখের পানি মুছে আবারও বলতে শুরু করলেন। বললেন, একটা জিনিস গোপন করে লাভ নেই। একবার কোরবানির ঈদের দিন সাগর একাই আমার বাসায় আসে। ও কোরবানির দুই ভাগ দিয়েছিল। একভাগ ও নিয়ে যাবে, আরেক ভাগ আমাকে দিয়ে যাবে। সেদিন সাগর একা আসায় আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, মেঘ ও রুনী কই? ওদের নিয়ে আসলি না? তখন সাগর বলেছিল, মা থাক না, যে যেভাবে ভালো থাকে সেভাবেই থাকুক। এ কথা বলার পর অঝোরে কাঁদতে থাকেন।মেঘকে বিদেশ পাঠানোর পরিকল্পনা : সাগরের এক বোন যুগান্তরকে বলেন, ‘একদিন কথা প্রসঙ্গে রুনীর মা আমাকে বলেছিলেন, মেঘকে বিদেশে পাঠিয়ে দেব। তখন আমি বলেছিলাম, কেন মেঘকে বিদেশে পাঠাবেন? তার মা-বাবার খুনিদের বিচার সে সামনে থেকেই দেখবে। ওর সামনে বাবা-মা মারা গেছে, একমাত্র ওই জানে বাবা-মা’র খুনি কারা।যেভাবে মামলা ঘুরে যাবে : সাগরের মা জানান, ‘একদিন মেঘ দিনের বেলা আমার বাসায় এসেছিল। সেদিন তার প্রচণ্ড জ্বর ছিল। কিন্তু জ্বর অবস্থায় তাকে আমার বাসা থেকে তারা (রোমান) নিয়ে যায়। এরপর মেঘের জ্বরের খবর নেয়ার জন্য রোমানকে মোবাইলে ফোন দিই। তাকে বলি, ওকে একটু ডাক্তার দেখিয়ে যত্ন কর। এ কথা বলতেই হঠাৎ রোমান রেগে যায়। চিৎকার করে আমার উদ্দেশে ধমকের সুরে বলে ওঠে, যান এখনই নিয়ে যান, নিয়ে যান মেঘকে। আমরা কোনো যত্ন নিই না? তখন আমি তাকে বলি, দিয়ে দে আমার নাতিকে...। এরপর সে আমাকে হুমকির সুরে বলে, নিয়ে দেখেন মেঘকে, মেঘ থাকবে নাকি! তখন আমি বলি, আমি তো বলিনি- মেঘকে একেবারে দিয়ে দে। ছুটির দিনে এখানে আসল- থাকল, আবার স্কুল খুললে চলে গেল। আমি কী নিয়ে বেঁচে থাকি? তোর মা তো তোদের নিয়েই আছে। আমি কী নিয়ে বাঁচব? তখন রোমান হুমকির সুরে বলে, নিয়ে দেখেন না কি করি। ৩ মিনিটের ভেতরে মামলা কিভাবে ঘুরে যায়। তখন আমি বলি, কেস ঘুরে যাবে মানে! কারো বাবার সাধ্য নেই কেস ঘুরিয়ে দেয়ার। কেস ঘুরাবে কে রে। পরে আমি রাগারাগি করলে আর কোনো কথা বলেনি সে।’এদিকে এসব বিষয়ে মামলার বাদী ও মেঘের মেজ মামা নওশের আলম রোমানের বক্তব্য জানতে চেয়ে মোবাইলে ফোন দিলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, এ নিয়ে তিনি কোনো কথা বলবেন না। এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, মেঘকে কেন একটি দিনের জন্য দাদির কাছে দেয়া হয়নি- এ প্রশ্নের পরপরই তিনি অনুসন্ধানী টিমকে জানান, কে বলেছে আপনাদের মেঘকে দেয়া হয়নি। নাম বলতে হবে। তখন তিনি বলেন, আমাদের দুই পরিবারের মধ্যে সবই ঠিক আছে। আসলে মেঘই যেতে চায় না। (চলবে) - See more at:-www.24banglanewspaper.com

Related Post:

  • 0Blogger Comment
  • Facebook Comment

pop Earnings