মামলা,
আদালত ও কারাগার- এসব নিয়েই মাঝে কয়েকটা দিন প্রচণ্ড চাপে ছিলেন পেসার
রুবেল হোসেন। আদালত জামিন দিয়েছেন, পরে বিদেশে যাওয়ার অনুমতিও পেয়েছেন।
দলের সঙ্গে অনুশীলনের পর আত্মবিশ্বাসী রুবেল পেছনের কথা ভুলে বিশ্বকাপ
নিয়েই ভাবতে চান। বিশ্বকাপের হিরো হতেও প্রস্তুত ডান-হাতি পেসার।
বাংলাদেশের জয় চান এবং নিজে জয়ের নায়ক হওয়া তার লক্ষ্য। বিশ্বকাপ তার জন্য
চ্যালেঞ্জ। মাঠের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত রুবেল। কাল ছিল বাংলাদেশ দলের শেষ
অনুশীলন। অনুশীলনের আগে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রুবেল
বলেন, ‘আমি খেলার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকি। এবার বিশ্বকাপ আমার জন্য বড়
চ্যালেঞ্জ। আমি প্রস্তুত। আত্মবিশ্বাসী। যদি সুযোগ পাই তাহলে কাজে লাগানোর
চেষ্টা করব।’
তিনি
বলেন, ‘আমাদের দেশে বাউন্সি উইকেট হয় না। অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে আমাদের
পেস বোলারদের জন্য একটা সুযোগ। সেটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করব। আমার মূল
লক্ষ্য একটাই- আমাকে ভালো খেলতে হবে।’ ২০০৯ সালে শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ানডে
ত্রিকেটে অভিষেক। এখন পর্যন্ত ৫৩টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচে রুবেলের
উইকেট ৬৯টি। ২০১১ সালে দেশের মাটিতেও বিশ্বকাপ খেলেছেন। এবার অস্ট্রেলিয়ায়
নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়ার লক্ষ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক দিন ধরে
ক্যাম্প করছি। আমাদের খেলোয়াড়দের ধারণা, আমরা অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনের সঙ্গে
মানিয়ে নিতে পারব। ওই কন্ডিশনে ভালো করতে সবাই আÍবিশ্বাসী।’জিম্বাবুয়ের
বিপক্ষে হোম সিরিজের শেষ দুটি ওয়ানডে ম্যাচে চারটি উইকেট নিয়েছেন তিনি। ওই
সিরিজের পর অখ্যাত অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপির করা নারী ও শিশু
নির্যাতন মামলায় ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগের কয়েকটি ম্যাচ খেলতে পারেননি
রুবেল। তিন দিন কারাগারেও ছিলেন তিনি। মাঠের বাইরে অক্রিকেটীয়
অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা কি চাপ তৈরি করবে তার ওপর? রুবেল বলেন, ‘আমি আসলে এটাকে
চাপ মনে করছি না। অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে খেলার সুযোগ পেয়েছি। বাড়তি কোনো
চাপ নেই।’ মানসিক অস্থিরতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে? তার উত্তর, ‘হ্যাঁ, আমি
চিন্তার মধ্যে ছিলাম। এখন ওসব আমার মাথার মধ্যে নেই। আমি এ নিয়ে চিন্তা
করছি না। আমার মূল লক্ষ্য ক্রিকেট নিয়ে। দেশের জন্য খেলব। দেশের হয়ে
বিশ্বকাপে যাচ্ছি এটাই আমার জন্য অনেক বড় কিছু। ওখানে কীভাবে ভালো করতে
হবে, এটাই আমার মাথায় এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।’ রুবেল বলেন, ‘কিছুদিন ধরে আমার
জীবনে অনেক কঠিন সময় গেছে। তবে এ নিয়ে পড়ে থাকতে চাই না। আমাদের সামনে অনেক
বড় মিশন। কীভাবে সফল হব, সেদিকেই ফোকাস রাখছি।’ তার কথায়, ‘আমি মাঠে
নামলেই ভালো খেলার চেষ্টা করি। এই বিশ্বকাপটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়ার কারণ
হচ্ছে, আমাদের ভালো কিছু করতে হবে।’অস্ট্রেলিয়ার
পেস কন্ডিশন তার জন্য বাড়তি প্রেরণা হবে কি? তিনি বলেন, ‘সাধারণত একটু
বাউন্সি উইকেট হলে পেসারদের জন্য সুবিধা হয়। বাউন্স দিয়ে ব্যাটসম্যানকে
আঘাত করা যায়। বাউন্সি উইকেটে পেস বোলারদের একটু লাইন-লেন্থ ঠিক রাখতে হয়।
অস্ট্রেলিয়ায় আমাদের সেভাবেই অনুশীলন করতে হবে। অনুশীলনের সুযোগগুলো কাজে
লাগাতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমার শক্তি হল বাউন্স, ইয়র্কার। ভালো জায়গায় বল
করা। অন্যদের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করছি না। আমার শক্তি অনুযায়ী কাজ করছি।’
দুই প্রান্ত দিয়ে নতুন দুটি বলে বোলিং করতে কোনো সমস্যা হবে না বলে রুবেলের
ধারণা। সমর্থকদের উদ্দেশে রুবেল বলেন, ‘কিছুদিন ধরে আমার খারাপ সময়
যাচ্ছিল। ওই সময় যারা আমার পাশে ছিলেন, তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা জানাই।’ www.24banglanewspaper.com