দুই দলের দুই চিত্র। একের পর এক সাফল্যের ভেলায় ভেসে বাংলাদেশ দল সিরিজ
শেষ করল পরাজয়ের হতাশা নিয়ে। পাকিস্তানের ঠিক উল্টো। একের পর এক
ব্যর্থতার যাতনা পেরিয়ে সিরিজ শেষ করল জয়ের আনন্দ নিয়ে। একটি পরাজয়
যেমন বাংলাদেশের পেছনের সব সাফল্য মিথ্যে করে দেবে না। তেমনি এক জয়ে
পাকিস্তানের পেছনের ব্যর্থতাও মুছে যাবে না।
এ বাস্তবতা মানছেন
মিসবাহ-উল-হকও। একে ‘মুখরক্ষার জয়’ ভাবতে নারাজ পাকিস্তান অধিনায়ক, বরং
বাংলাদেশকে প্রাপ্য মর্যাদাই দিচ্ছেন, ‘এটা মুখরক্ষার জয় নয়। অনেক
পরিবর্তন হয়েছে, সে ব্যাপারেও আমাদের ভাবতে হবে। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিতে
বাংলাদেশ দল বেশি অভিজ্ঞ ছিল। একই দল নিয়ে তারা গত চার-পাঁচ বছর ধরে
খেলছে। তাদের সেই ধারটা ছিল। কাজেই বিজয় তাদের পাওনা ছিল। তবে টেস্ট
ম্যাচে সবকিছুই ভিন্ন ছিল। আমরা বেশি অভিজ্ঞ ছিলাম। আমরা সত্যি ভালো খেলছি,
সেটি আবারও প্রমাণ করেছি। তবে অবশ্যই প্রথম টেস্ট ড্র করাটা আমাদের জন্য
হতাশার ছিল। ধারাবাহিক পারফরম্যান্সই আমাদের সাফল্যের চাবিকাঠি। যদি আমরা
এটা ধরে রাখতে পারি, তবে দারুণ হবে।’
বাংলাদেশ সফরে এসে ছয় ম্যাচ
(প্রস্তুতি ম্যাচ ধরে) জয়হীন থাকার পর অবশেষে জয়ের দেখা পেল পাকিস্তান।
মিসবাহ মনে করেন, এ জয় আত্মবিশ্বাসের জ্বালানি হিসেবেই কাজ করবে তাদের
জন্য, ‘প্রতিটি ম্যাচ, প্রতিটি সিরিজ আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি
বাংলাদেশ যেভাবে খেলেছে, তাতে আত্মবিশ্বাসের জন্য টেস্ট সিরিজটা জেতা খুব
দরকার ছিল। দল, খেলোয়াড় এমনকি আমাদের দর্শক, সবার আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে
জয়টা সত্যি দরকার ছিল।’
চতুর্থ দিনে পর্বতসমান লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যেভাবে আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করলেন তাতে কি
বিস্মিত মিসবাহ? প্রতিপক্ষকে সম্মান জানিয়েই পাকিস্তান অধিনায়ক বললেন,
‘এমন পরিস্থিতি আপনি সহজেই যে কাউকে দায়ী করতে পারবেন। আসলে প্রতিপক্ষকে
খেলা থেকে ছিটকে দিতে ফের ব্যাটিং করার চিন্তা ও ফলোঅন না-করানোর ভাবনা—এমন
পরিস্থিতিতে যখন ব্যাটিং দল ব্যাট করতে নামে এবং তাদের সামনে পড়ে থাকে
পুরো দুটো দিন, লক্ষ্য থাকে ৫৫০ রান। স্বাভাবিকভাবেই যেকোনো দলে এমনটা ঘটতে
পারে। দুবাই, আবুধাবিতেও আমাদের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়াও এমনটা করেছিল।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য এটা মোটেও সহজ ছিল না।’
ওয়ানডে থেকে
বিদায় নিয়েছেন। হয়তো এটাই মিসবাহর শেষ বাংলাদেশ সফর। টেস্ট থেকে অবসর
নিয়ে কী ভাবছেন পাকিস্তান অধিনায়ক? বেশ রসিকতা করেই জবাব দিলেন, ‘আমরা
কেউ বলতে পারি কদিন বাঁচব? (হাসি) কেউ জানে না। হতে পারে পৃথিবীতে এটাই
আমার শেষ দিন, কেউ জানে না। তবে সবারই কিছু পরিকল্পনা থাকে। এ মুহূর্তে
সিদ্ধান্ত নিইনি আসলে কত দিন খেলব। তবে অবশ্যই ভাবছি।’more-www.24banglanewspaper.com