মাদকাসক্তি,
রাতভর পার্টিতে মেতে থাকা, গয়না চুরি, বেপরোয়া গাড়ি চালানোসহ অসংযত
জীবনযাপনের জন্য কম ভোগান্তি পোহাতে হয়নি ‘মিন গার্লস’ তারকা লিন্ডসে
লোহানকে। ক্যারিয়ারে ধস নেমেছে। নিজ দেশও ছাড়তে হয়েছে। এখন পর্যন্ত বহুবার
আদালতের নির্দেশে সাজা খেটেছেন লিন্ডসে। আবারও সাজার ফাঁদে পড়লেন তিনি।
আদালতের নির্দেশে আজ মঙ্গলবার থেকে কমিউনিটি সার্ভিস দিতে হচ্ছে তাঁকে।
২০১২ সালে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর মামলায় তাঁর এই সাজা।
গত ফেব্রুয়ারি
মাসে লোহানকে ১২৫ ঘণ্টা কমিউনিটি সার্ভিসের নির্দেশ দেন লস অ্যাঞ্জেলেসের
একটি আদালত। কিন্তু এখন পর্যন্ত লোহান মাত্র নয় ঘণ্টা ৪৫ মিনিট কমিউনিটি
সার্ভিস দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে লন্ডনে বসবাস করছেন লিন্ডসে। সেখানে
কমিউনিটি সার্ভিস দিচ্ছেন-এমন ছবি লিন্ডসে তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে
পোস্ট করেন চলতি মে মাসের শুরুর দিকে।
এ ছাড়া নিজের অ্যাপার্টমেন্টে বসে
স্থানীয় একটি দাতব্য কাজের জন্য ফেসবুকে বার্তা ছড়িয়ে কমিউনিটি সার্ভিস
দেওয়ার চেষ্টা করেন লিন্ডসে। কিন্তু বিচারক তাঁকে সাফ জানিয়ে দেন, ঘরে বসে
অন্তর্জালের মাধ্যমে কমিউনিটি সার্ভিস দেওয়া যাবে না। আদালতের নির্দেশ
অনুযায়ী নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে ডাফিল্ড চিলড্রেন’স সেন্টারে কমিউনিটি
সার্ভিস দিতে হবে তাঁকে। অন্যথায় তা কমিউনিটি সার্ভিস বলে বিবেচিত হবে না।
১২৫ ঘণ্টা কমিউনিটি সার্ভিস সম্পূর্ণ করতে ২৮ মে পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে
দেওয়া হয়েছে লিন্ডসেকে। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে এইসশোবিজ ডটকম।
এর আগে
২৪০ ঘণ্টা কমিউনিটি সার্ভিসের আদেশ পেয়েছিলেন লিন্ডসে। কিন্তু বিষয়টিকে
হালকাভাবে নেন তিনি। ভক্তদের সঙ্গে দেখা করে সৌজন্য বিনিময়কেও কমিউনিটি
সার্ভিস বলে চালাতে চেয়েছিলেন তিনি। এসব কারণে তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে আরও
১২৫ ঘণ্টা কমিউনিটি সার্ভিসের আদেশ দেন আদালত।
মাদকাসক্তি, মামলা, সাজা,
হলিউডে ডুবন্ত ক্যারিয়ার-সবকিছু মিলিয়ে চরম দুঃসময় পার করতে হয়েছে
লিন্ডসেকে। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগে ২০০৭ সালে মামলা হয়
লিন্ডসের বিরুদ্ধে। পরবর্তী সময়ে মাদকাসক্তি, বুনো জীবনযাপনসহ আরও নানা
সমস্যায় জড়িয়ে দুর্বিষহ হয়ে ওঠে লিন্ডসের জীবন। তাঁর অভিনয় ক্যারিয়ারে ধস
নামে। দারুণ আর্থিক টানাপোড়েনের মধ্যেও পড়তে হয় তাঁকে।
লিন্ডসে অভিনীত
‘লিজ অ্যান্ড ডিক’, (২০১২) ‘দ্য ব্লিং রিং’ (২০১৩), ‘দ্য ক্যানিওনস’ (২০১৩)
ছবিগুলো সাফল্যের মুখ না দেখায় হতাশ হয়ে পড়েন ২৮ বছর বয়সী এ তারকা
অভিনেত্রী। আদালতের নির্দেশে মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রে ২০১৩ সালে
চিকিত্সা প্রক্রিয়া শেষ করেন তিনি।
মার্কিন নাট্যকার ও চলচ্চিত্র
নির্মাতা ডেভিড ম্যামেট রচিত ‘স্পিড-দ্য-প্লো’ নাটকের অন্যতম প্রধান চরিত্র
ক্যারেন। ডেভিড ম্যামেট মার্কিন চলচ্চিত্র ব্যবসার খুঁটিনাটি নানা বিষয়
নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক নাটক ‘স্পিড-দ্য-প্লো’ রচনা করেন ১৯৮৮ সালে। একই বছরের ৩
মে নাটকটি প্রথম মঞ্চস্থ করে যুক্তরাষ্ট্রের লিংকন সেন্টার থিয়েটার।
নাটকটিতে ক্যারেন চরিত্রে অভিনয় করেন ‘পপ সম্রাজ্ঞী’খ্যাত গায়িকা ও
অভিনেত্রী ম্যাডোনা। পরবর্তী সময়ে আরও বহুবার নাটকটি মঞ্চস্থ হয়েছে।
গত
বছর ‘স্পিড-দ্য-প্লো’ নাটকটি নতুনভাবে মঞ্চে আনার উদ্যোগ নেয় লন্ডনের
ওয়েস্ট এন্ড থিয়েটার। নাটকটিতে ক্যারেন চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পান
হলিউডের প্রবলেম সেলিব্রেটি তকমা পাওয়া লিন্ডসে। গত বছরের জুনে লন্ডনে উড়াল
দেন তিনি।
লিন্ডসের জন্ম ও বেড়ে ওঠা যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে।
কিন্তু অভিমানে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে স্থায়ীভাবে বসবাসের সিদ্ধান্ত নেন
তিনি। লিন্ডসে জানান, লন্ডনে স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরার সুযোগ পেয়ে তিনি যথেষ্ট
মানসিক প্রশান্তি পাচ্ছেন। লন্ডনের অধিবাসীরা তাঁর প্রতি যেমন শ্রদ্ধাশীল
আচরণ দেখাচ্ছেন, বিগত কয়েক বছরে তা পাননি।more-www.24banglanewspaper.com