শিরোনাম
Loading...

news review 1

reveunis 2

Phone-Video

সোমবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৪

তেল-গ্যাস বিদেশিদের হাতে তুলে দিতেই নতুন পিএসসি

নিউজ ডেস্ক : বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর দাবির প্রেক্ষিতে বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে বেশি মূল্য নির্ধারণ করে তড়িঘড়ি করে তৈরি করা হচ্ছে উৎপাদন অংশীদারিত্ব চুক্তি (পিএসসি)-২০১৫। এতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বাংলাদেশ তথা পেট্রোবাংলাকে বেশি দামে গ্যাস কিনতে হবে। নতুন এ পিএসসি চুক্তির ফলে দেশের তেল-গ্যাস সম্পদ বিদেশিদের কাছে তুলে দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
www.24banglanewspaper.com
পিএসসি-২০১২ অনুযায়ী গভীর সমুদ্রের জন্য প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ৫ ডলার। বহুজাতিক কোম্পানির দাবির মুখে তা বাড়িয়ে নতুন পিএসসিতে সাড়ে ৬ ডলার করা হচ্ছে। এতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বেশি দামে গ্যাস বিক্রির সুযোগ পাচ্ছে। এতেও তারা খুশি না হয়ে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম সাড়ে ৮ ডলার করে দাবি করেছে। যদিও পেট্রোবাংলা বলছে, বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ডাকা দরপত্রকে প্রতিযোগিতামূলক করতেই এটি করা হচ্ছে।

পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নতুন পিএসসি-২০১৫ এর খসড়া প্রণয়নের জন্য পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক সফিকুল ইসলামকে আহবায়ক করে ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৮ নভেম্বর গঠিত কমিটিকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে খসড়া জমা দিতে বলা হয়েছিল। পাশাপাশি বিডিং রাউন্ড-২০১৫ এর বিডিং ডকুমেন্ট (দরপত্র), ব্লক নির্ধারণী মানচিত্রও প্রণয়ন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু কমিটি গতকাল শেষ দিনেও তা জমা দিতে পারেনি বলে জানা গেছে। অবশ্য শিগগিরই জমা দেবে বলে জানিয়েছেন পেট্রোবাংলার পরিচালক অপারেশন কামরুজ্জামান।

কমিটির এক সদস্য জানান, তড়িঘড়ি করে বলা হলেও এত অল্প সময়ের মধ্যে পিএসসির খসড়া তৈরি করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। ভারত-মিয়ানমারের সঙ্গে তুলনা করে গ্যাসের প্রতিযোগিতামূলক একটি দাম নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। দাম বৃদ্ধি ছাড়া অন্য কোনো বিষয় পরিবর্তনের পরিকল্পনা নেই।

পেট্রোবাংলার ঐ সূত্রটি আরো জানায়, মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিরোধ নিষ্পত্তির পর কয়েক দফা দরপত্র ডেকেও প্রত্যাশিত সাড়া পায়নি পেট্রোবাংলা। অধিকাংশ ব্লকে দরপত্র জমা পড়েনি। সম্প্রতি গ্যাসের দামে আপত্তি জানিয়ে গভীর সমুদ্রের দুটি ব্লক ছেড়ে দিয়েছে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি কনোকোফিলিপস। যদিও গভীর সমুদ্রের দুটি ব্লকে অনুসন্ধান চালিয়ে একটি গ্যাস স্তর খুঁজে পেয়েছে তারা। এতে চার ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ) গ্যাসের মজুদ আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এটিকে বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনযোগ্য মনে করছে না কনোকো। কনোকোর সঙ্গে সম্পাদিত পিএসসি-২০০৮ অনুযায়ী প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ৪ দশমিক ২ ডলার। পিএসসি-২০১২ অনুযায়ী প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম সাড়ে ৬ ডলার। আর তাই গ্যাসের দাম বাড়ানোর দাবি জানায় কনোকো। দাবি পূরণ না হওয়ায় কার্যক্রম গুটিয়ে নেয় তারা। ২০১১ সালের ১৬ জুন গভীর সমুদ্রের ১০ ও ১১ নম্বর ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য কনোকোফিলিপসের সঙ্গে পিএসসি সই করে পেট্রোবাংলা।

গংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত কয়েক বছরে ভারত ও মিয়ানমার কয়েক দফা গ্যাসের দাম সংশোধন করেছে। বাংলাদেশ এক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। তাই দাম বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে নতুন পিএসসি করা হচ্ছে। মিয়ানমারে প্রতি ইউনিট গ্যাস ৭ ডলারের বেশি দামে বিক্রি করছে বিদেশী কোম্পানি। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে পাইপলাইনের চার্জ। তাতে মিয়ানমার থেকে চীন ও থাইল্যান্ডের কেনা গ্যাসের দাম পড়ছে সাড়ে ৮ থেকে ৯ ডলার। ভারতেও গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ৮ দশমিক ৪ ডলার করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ কারণে উৎপাদন পর্যায়ে গ্যাসের দাম বাড়াতে চাপ দিচ্ছে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। তারা অনেক দিন ধরেই পেট্রোবাংলাকে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম সাড়ে ৮ ডলার নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়ে আসছে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, এর আগেও বহুজাতিক কোম্পানির দাবির মুখে পিএসসি-২০১২ সংশোধন করা হয়। সংশোধিত পিএসসিতে কোম্পানির প্রাপ্ত গ্যাসের ৫০ শতাংশ সরাসরি তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রির সুযোগ রাখা হয়েছে। বাকি ৫০ শতাংশও চাইলে তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রি করতে পারবে কোম্পানিগুলো। তবে সেক্ষেত্রে প্রথমে প্রস্তাব দিতে হবে পেট্রোবাংলার কাছে। প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে গ্যাসের বাজারমূল্য নির্ধারণ হবে। এছাড়া কস্ট রিকভারি ৫৫ থেকে বাড়িয়ে ৭০ শতাংশ করা হয়েছে। এসব সুবিধা নতুন পিএসসিতেও থাকছে। সব মিলিয়ে গ্যাসের দাম ইউনিটপ্রতি ৮ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। তাই আমি বলব নতুন পিএসসির মাধ্যমে নিজেদের সম্পদ বিদেশীদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।

Related Post:

  • 0Blogger Comment
  • Facebook Comment

pop Earnings