ঢাকা : আচরণগত সমস্যা।
তাই কয়েক মাসের জন্য তাকে নির্বাসনে পাঠানো হলো ক্রিকেট থেকে। যখন ফিরলেন
তখন ক্রিকেট দুনিয়া দেখল আরও ক্ষুরধার সাকিব আল হাসানকে। কি ব্যাটিং কি
বোলিং সবখানেই সমান পারঙ্গম। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের খেতাব তো রবি চন্দ্র
অশ্বিণের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিলেনই, সঙ্গে গড়লেন আরও নতুন রেকর্ড। খুলনা
টেস্টে সেঞ্চুরি এবং ১০ উইকেট নিয়ে সাকিব তো বসে গেলেন দুই গ্রেট ইয়ান
বোথাম এবং ইমরানের খানের পাশে। এই কীর্তি শুধু তিনজনেরই। বিশ্ব মিডিয়া মেতে
উঠলো সাকিব বন্দনায়।
আর সাকিবের কারি কারি অর্জন দেখে হাসেন
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান। সেটা হয়তো এই
ভেবে, ‘দেখ তোমাকে শাস্তি দিয়ে আমরা ভুল করিনি! তা-না হলে কি এই
পারফরম্যান্স বেরিয়ে আসে!’ নাজমুল হাসানের এই ভাবনা হয়তো ঠিক, হয়তো ঠিক না?
তবে তিনি যে সাকিবের কীর্তিতে যারপনারই খুশি, সেটা তার এক চিলতে হাসিতেই
ফুটে উঠেছে। আর সেই খুশিতেই বলে দিয়েছেন, সাকিব যে পারফরম্যান্স করছেন তাতে
খুশি না হয়ে উপায় আছে। ও আপিল করলে আমরা বিদেশী লিগগুলোতেও আর তাকে বাধা
দেব না।
সাকিবকে বাধা দেওয়া কোনভাবেই আর সম্ভব নয়।
তার কল্যাণেই যে, বাংলাদেশের নাম উঠে গিয়েছে বিশ্ব মিডিয়ায়। কারণ সাকিব
খুলনা টেস্টে বোথাম-ইমরানের পাশে না বসলে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টেস্ট
সিরিজের খবর অন্য দেশের খেলার পাতায় থাকতো কোনায় লুকিয়ে। যেটা খুঁজতে
অনুবীক্ষণ যন্ত্রের দরকার পড়তো। সব আলো নিজের করে নিয়ে সাকিব তা হতে দেননি।
www.24banglapaper.blogspot.com
তিন টেস্টের সিরিজে কি করেননি সাকিব!
মাগুড়ার ছেলেটি ‘টিম বাংলাদেশ’-এ থাকা মানেই তো অন্যরকম সঞ্জীবনী শক্তি
ফিরে আসা। সাকিব সেই প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছেন একের পর এক।
তিন টেস্টের সিরিজে সবচেয়ে বেশি উইকেট
গেছে সাকিবের পকেটে। ১৮ উইকেট নিতে তাকে ৬ ইনিংসে বল করতে হয়েছে ১২৯.৫
ওভার। রান দিয়েছেন ৩২৯। মেডেন পেয়েছেন ২৯টি। ওভার প্রতি রান দিয়েছেন ২.৫৩
করে। একটা উইকেট পেতে সাকিবকে খরচ করতে হয়েছে ১৮.২৭ রান। এক ইনিংসে সেরা
বোলিং করেছেন ঢাকা টেস্টে ৫৯/৬। এর মধ্যে খুলনা টেস্টে দুই ইনিংসে ৫ উইকেট
করে নিয়েছেন ১০ উইকেট।
এ তো গেল সাকিবের বোলিং কীর্তি। এবার দেখা
যাক ব্যাট হাতে কেমন ছিলেন তিনি। তিন টেস্টের ৬ ইনিংসেই তিনি ব্যাট হাতে
নেমেছেন। রান করেছেন মোট ২৫১। সর্বোচ্চ ১৩৭ রানের ইনিংস খেলেছেন খুলনা
টেস্টে। এক সেঞ্চুরির পাশে আছে, একটি ফিফটিও। গড় ৪১.৮৩। স্বাভাবিকভাবেই তাই
আরেকবার সিরিজ সেরার পুরস্কারটাও চলে গেছে সাকিব আল হাসানের হাতে। তাই
বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারকে গ্রেট না বলে উপায় আছে?