শিরোনাম
Loading...

news review 1

reveunis 2

Phone-Video

শনিবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৫

রোমাঞ্চ, শিহরণ ও প্রতিজ্ঞা

এই লেখা যখন পড়ছেন, বাংলাদেশ দল তখনো ব্রিসবেনের পথে। বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার সংক্ষিপ্ততর পথ থাকলেও আইসিসির অফিশিয়াল ‘বাহন’ এমিরেটস এয়ারলাইনস বলে যেতে হচ্ছে ঘুরপথে। অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে মাশরাফি বিন মুর্তজারা ঢাকা ছেড়েছেন কাল রাতে।
১৫ জন খেলোয়াড় আর টিম ম্যানেজমেন্টের আট সদস্য মিলিয়ে বহরটা ২৪ জনের হলেও কাল রাতে বিমানে উঠেছেন ২১ জন। খেলোয়াড়দের মধ্যে বিগ ব্যাশে খেলা উপলক্ষে আগেই অস্ট্রেলিয়া গেছেন সাকিব আল হাসান। স্ত্রী সন্তানসম্ভবা বলে আগে থেকে অস্ট্রেলিয়ায় আছেন ট্রেনার মারিও ভিল্লাভারায়ণও। আর ডাক্তার দেখাতে মেলবোর্ন হয়ে যাবেন বলে তামিম ইকবাল দেশ ছাড়বেন আজ রাতে।
প্রায় ২৮ ঘণ্টার বিমানভ্রমণ দিয়ে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ দলের প্রায় দুই মাসের বিশ্বকাপ-সফর। অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে প্রথম আলোর কাছে বিশ্বকাপ দলের খেলোয়াড়েরা জানিয়েছেন তাঁদের রোমাঞ্চ আর আবেগের কথা। কেউ কেউ বিমানে ওঠার আগেও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ—বিশ্বকাপে ভালো কিছু করতে হবে। কেউ সামান্য হলেও ‘হোম সিক’, কেউবা বলেছেন বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে দারুণ শিহরিত।
বাবাকে কাছে পাওয়া যাবে না অনেক দিন, ছোট্ট হোমায়রার তাই মন খারাপ। বড্ড বাবা-ন্যাওটা মেয়ে। সব সময় বাবার সঙ্গে থাকতে চায়। বিষণ্ন মেয়ের মুখে হাসি ফোটাতে চাইছেন বাবা। হোমায়রার মা জানেন, গোটা দেশের স্বপ্ন সঙ্গী করে যাচ্ছে মেয়ের বাবা। বিদায় জানাচ্ছেন তাই হাসিমুখেই। বিশ্বকাপ খেলতে কাল রাতে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে উড়াল দিয়েছে মাশরাফির বাংলাদেশ l প্রথম আলো www.24banglanewspaper.com
মাশরাফি বিন মুর্তজা: লক্ষ্য তো অনেক কঠিন এবং বড়। তবে যাওয়ার আগে একটু তো খারাপ লাগছেই। বিশেষ করে বাচ্চা দুটোর জন্য। মেয়েটা আমার সঙ্গেই ঘুমায়, ও আমার পিছু ছাড়ে না। ওদের অনেক মিস করব। তবে আবারও বলি, আমাদের ওপর অনেক বিরাট দায়িত্ব। কাজেই এসব নিয়ে আপাতত না ভাবাই ভালো। যাওয়ার আগে দলের পক্ষ থেকে দেশবাসীর দোয়া চাচ্ছি।
মুশফিকুর রহিম: খুবই ভালো লাগছে যে আমি বিশ্বকাপ দলের সঙ্গী হতে পারছি। সব ঠিকঠাক থাকলে ইনশাআল্লাহ এটা আমার তৃতীয় বিশ্বকাপ হবে। ভালো পারফর্ম করতে চাই। একটাই সমস্যা, পরিবারকে ফেলে অনেক দিন বাইরে থাকতে হবে।
মাহমুদউল্লাহ: খুবই ভালো লাগছে যে আমি বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছি। আমাদের প্রস্তুতি এবার ভালো হয়েছে। ইনশাআল্লাহ সবাই সবার সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে ভালো খেলার চেষ্টা করব। পরিবারকে ফেলে অনেক দিন থাকতে হবে বলে একটু খারাপ লাগছে। অবশ্য সব ঠিকঠাক থাকলে মাস খানেক পর আমার আর মুশফিকের পরিবারের আমাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা আছে।
রুবেল হোসেন: বিশ্বকাপ দলের সদস্য হতে পারাটা সব সময়ই বিশেষ কিছু। নানা কারণে মাঝখানে আমার খুব খারাপ সময় গেছে। তবে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, অস্ট্রেলিয়ায় আমি যাব। সেটাই শেষ পর্যন্ত হচ্ছে। মনের মধ্যে এখন একটাই চিন্তা—বিশ্বকাপে আমাকে ভালো খেলতে হবে।
নাসির হোসেন: ফ্লাইটের আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। অনেক টেনশনে আছি। কখন বের হব...কখন যাব। দুই মাসের জন্য সম্ভবত আগে কখনো দেশের বাইরে যাইনি। আমাকে বিদায় দিতে আব্বা ছাড়া বাসার সবাই অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে রংপুর থেকে চলে এসেছে। তাদের জন্য একটু খারাপও লাগছে। তবে আশা করি ওখানে গিয়ে অনুশীলন, খেলা এসবের মধ্যে ঢুকে পড়লে এসব আর মাথায় থাকবে না।
মুমিনুল হক: বিশ্বকাপে যাচ্ছি মানে দেশের অনেক বড় দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে যাচ্ছি। তবে আমি মনে করি এত চিন্তা মাথায় না নেওয়াই ভালো। সব সিরিজেই আমার একটাই চিন্তা থাকে—ভালো খেলে দেশকে কিছু দেওয়ার চেষ্টা করা। এবারও সেই লক্ষ্য নিয়েই যাচ্ছি। বিশ্বকাপ বলে বাড়তি টেনশন নেই। টেনশন করলেই সমস্যা।
এনামুল হক: আমার কিছু কিছু সময় বিশ্বাস হতো না যে আমি বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছি। এখন যাওয়ার আগ মুহূর্তে এসে বিশ্বাস হচ্ছে। একটু রোমাঞ্চিত লাগছে। অনেক বড় দায়িত্ব নিয়ে যাচ্ছি, দেশের সবাই তাকিয়ে থাকবে আমাদের দিকে। এটা একটা অন্য রকম অনুভূতি। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব যার সঙ্গেই দেখা হচ্ছে, বিশ্বকাপ নিয়ে কথা হচ্ছে। এ ছাড়া টেলিভিশন চ্যানেল, মাঠ—সবখানে এখন এই একটাই কথা। নিজের ভেতরও একটা উত্তেজনা টের পাচ্ছি।
আল আমিন: অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে বিশ্বকাপ খেলব...ভাবতেই খুব ভালো লাগছে। সত্যি বলতে কি আমার ভেতর কোনো রকম টেনশন বা চাপ কাজ করছে না। বন্ধুবান্ধব, পরিবার-পরিজন ছাড়া অনেক দিন থাকতে হবে, সে জন্যই যা একটু খারাপ লাগছে।
তাইজুল ইসলাম: এত লম্বা সময়ের জন্য কখনো দেশের বাইরে যাইনি। ১২ তারিখে ঢাকায় এসেছি, অবরোধের কারণে এরপর আর নাটোরেও যাওয়া হয়নি। আমার স্ত্রী আছে সেখানে। যাই হোক, বিশ্বকাপ একটা বড় আসর। আমি সেখানে খেলতে যাচ্ছি বলে পরিবারের সবাই খুশি। খেলা ছাড়া অন্য কারণে এত দিনের জন্য বাইরে গেলে হয়তো সবাই মন খারাপ করত। এখন সেটা হচ্ছে না। আরও ভালো লাগবে আমার ওপর থাকা দায়িত্বটা পালন করতে পারলে।
তাসকিন আহমেদ: বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছি, ভালো তো অবশ্যই লাগছে। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন সবাই ফোন করে শুভকামনা জানাচ্ছে, দোয়া করছে। আমার মতো তারাও আমার বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে রোমাঞ্চিত। আমি আমার বাবাকে অনুরোধ করেছি অস্ট্রেলিয়ায় আমাদের খেলা দেখতে যাওয়ার জন্য। তিনি নানা ব্যস্ততার অজুহাত দেখাচ্ছেন। তবে আশা করি শেষ পর্যন্ত উনি যাবেন।
সাব্বির রহমান: অবরোধের কারণে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে বাড়ি যেতে পারিনি। মা-বাবার সঙ্গে তাই দেখা হয়নি। সে জন্য একটু খারাপই লাগছে। তাঁদের সঙ্গে দেখা করে যেতে পারলে ভালো লাগত। এর বাইরে বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে বেশ রোমাঞ্চিতই। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে পৌঁছালে হয়তো আরও ভালো করে বুঝতে পারব কেমন লাগছে।
আরাফাত সানি: সত্যি বলতে আমি খুবই রোমাঞ্চিত। সঙ্গে অবশ্য টেনশন, একটু নার্ভাসনেসও আছে। এত দিন সবাই মিলে অনুশীলনের মধ্যে ছিলাম, সেটার এক রকম অনুভূতি। আর এখন যাওয়ার আগে সম্পূর্ণই ভিন্ন অনুভূতি। জাতীয় দলের অংশ আমি। অনেক বড় দায়িত্ব মাথার ওপর।
সৌম্য সরকার: যাওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে এসে একটু অন্য রকম লাগছে। এখন বুঝতে পারছি বিশ্বকাপে যাওয়া ব্যাপারটা আসলে কী! অবরোধের কারণে সাতক্ষীরা থেকে মা আসতে না পারলেও আমাকে বিদায় জানাতে চুয়াডাঙ্গা থেকে বাবা চলে এসেছেন। তবে দুজনই আমাকে আশীর্বাদ করেছেন যেন ভালো খেলতে পারি।

Related Post:

  • 0Blogger Comment
  • Facebook Comment

pop Earnings